অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ

অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ নিয়ে আজকের এই পোস্টে আপনাকে স্বাগত জানাই। অবিবাহিত অবস্থায় মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণে অনেকেই দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকেন। আগে এই সমস্যা ফেস না করার কারণে অনেকের মনে বিভিন্ন চিন্তা এসে থাকে। এজন্য কারও পরামর্শ নিতেও দ্বিধা তৈরি হয়। এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ এবং অনিয়মিত পিরিয়ড কেনো হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে অনেক প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।

অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ

বিবাহিত এবং অবিবাহিত উভয় নারীদের নিয়মিত মাসিক হওয়াটাই স্বাভাবিক। একজন নারীর জীবনে মাসিক একটি গুরুত্তপূর্ণ অংশ। সাধারণত ১২-৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই সময়কে নারীর প্রজননকাল বলা হয়ে থাকে। এই সময়ের মধ্যে একজন নারী মা হওয়ার স্বাদ আস্বাদন করতে পারবেন। প্রজননকালের পরবর্তী সময়ে হঠাৎ করে মাসিক বন্ধ হয়ে যায় এবং গর্ভধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়, যাকে মনোপেজ বলে। তবে মনোপেজ শুরু হওয়ার পূর্বে মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে যেকোনো নারীর দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক।

অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ

প্রজননকালে একটি নারীর শরীরে প্রতি মাসে সন্তান ধারনের জন্য ডিম্বাণু তৈরি হয়। যা শুক্রাণুর সংস্পর্শে এসে নিষিক্ত না হলে উক্ত ডিম্বাণু রক্তস্রাবের মাধ্যমে প্রতি মাসে এটি চক্রাকারে যোনি পথ দিয়ে বেরিয়ে আসে। এই চক্রকে সাধারণত ঋতুচক্র বলে। মাসিক চলাকালীন সময়ে মেয়েদের নানা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন পেট ব্যথা, পিঠ বা কোমর ব্যাথা, বমি বমি ভাব। নানা কারনে এই নিয়মের ছন্দপতন ঘটতে পারে ২ মাস অন্তর অন্তর অথবা ৪ মাস অন্তর অন্তর ঘটতে পারে। ঋতুচক্রের এই ছন্দপতনই অনিয়মিত মাসিক কিংবা মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ।

আরও পড়ুন – কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে

অনেকেই অনিয়মিত মাসিক কেনো হয় নিয়ে নানা দুশ্চিন্তা করেন। অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে ডিম্বাশয়ের ত্রুটি বা সিস্ট, হরমোনের তারতম্যজনিত সমস্যা, অপুষ্টি। অপুষ্টির মানে কেবল ভগ্নস্বাস্থ্য নয়, শারীরিক স্থূলতা বা অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়াও অপুষ্টির লক্ষণ। কখনো কখনো সন্তান প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে হরমোন তৈরির প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে, মাসিকও বন্ধ হয়ে যায়। এ সমস্যার নেপথ্যে মস্তিষ্কের টিউমার, মানসিক রোগ বা নেশাদ্রব্য সেবনও থাকতে পারে। অনেক সময় এমআর করানোর পরে জরায়ুর গঠন পরিবর্তিত হয়ে গেলেও এমন সমস্যা হতে পারে।

অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয় কেন?

অনিয়মিত মাসিক অথবা মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার আরো কিছু কারণ রয়েছে। পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের (POS) কারণে ও অনেক ক্ষেত্রে মাসিক অনিয়মিত বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা, ক্যাফেইনযুক্ত খাবার গ্রহণ, অপরিচ্ছন্ন থাকা, ধূমপান বা মদ্যপান জাতীয় নেশাদ্রব্য সেবন করা ইত্যাদি।

অনেক ক্ষেত্রে মনোনিউক্লিওসিস, ঠাণ্ডা, সর্দি, গলার ইনফেকশন- এ ধরনের সমস্যায় পিরিয়ড অনিয়মিত বা দেরিতে হয়ে থাকে। তবে বড় কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলেও মাসিক দেরিতে হয়। যেমন থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম ও অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ।

ওজন কম অথবা অতিরিক্ত ওজন মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ। এছাড়াও ফাইব্রয়েডস নামক টিউমারের ন্যায় এক ধরনের বস্তু যা জরায়ুতে অবস্থান করলে মাসিকের স্বাভাবিক চক্রকে বাধাগ্রস্ত করে যার ফলে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়।

টিনেজার কিংবা বিবাহিত মহিলাদের মধ্যে অনেকেই অনিয়মিত মাসিকের সমস্যায় ভোগেন। লম্বা সময় স্ট্রেসে থাকলে বা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলেও মাসিক চক্রের ছন্দপতন ঘটতে পারে।

মেয়েদের মাসিকের সময় কি কি সমস্যা হয়?

যাদের পূর্বে নিয়মিত মাসিক হতো কিন্তু হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে সেটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কিছু উপসর্গ রয়েছে। সেগুলো হলো: প্রচন্ড মাথা ব্যথা করা, আকস্মিক মাথা গরম হয়ে যাওয়া, শরীরে ছেলেদের মত লোম গজিয়ে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, রাতে ঘুমের সময় অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, অনিদ্রা ও মানসিক অস্থিরতা, যোনিপথে শুষ্কতা—ইত্যাদি।
বাংলায় আইটি
এমতাবস্থায় মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ২-৩ মাস মাসিক বন্ধ থাকলে গর্ভে সন্তান আছে কি না তা পরীক্ষা করতে হবে। ভ্রূণ অবস্থায় কোথায় অবস্থান করছে টা নিশ্চিত করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ভ্রূণ সঠিক জায়গায় না থাকলে ভ্রূণের বৃদ্ধির সাথে সাথে মায়ের জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।

তাই এই জটিলতা এড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া অতীব প্রয়োজন। এছাড়াও থাইরয়েড কিংবা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের সমস্যা আছে কি না পরীক্ষা করতে হবে। রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা গ্রহণ করলে আবারও নিয়মিত মাসিক শুরু হবে, যদি ডিম্বাশয়, জরায়ু বা পিটুইটারি গ্রন্থির গঠনগত কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে পরবর্তীতে মা হওয়ার ক্ষেত্রেও এটি কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।

আমাদের শেষ কথা

বাংলায় আইটির আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েছেন। এতে করে মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এমন আরও পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখতে পারেন।

Leave a Comment