আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

আইডি কার্ড বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো এই পোস্টে। আপনি একজন নতুন ভোটার কিংবা পুরাতন ভোটার হয়ে থাকলে, অনলাইন থেকে কিভাবে আইডি কার্ড বের করবেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই পোস্টে। নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম, ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম, হারানো আইডি কার্ড বের করার নিয়ম, অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম, ভোটার স্লিপ দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম, স্লিপ নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পাবেন এক পোস্টেই।

অনেকেই নতুন ভোটার হয়েছেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করার পর ছবিও তুলেছেন। কিন্তু, এখন অব্দি আইডি কার্ড পাননি। এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম না। আপনিও যদি এমন ছবি তুলে থাকেন, কিন্তু আইডি কার্ড পাননি। তবে, সামান্য কিছু ধাপ অতিক্রম করেই সহজেই আপনার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

বিভিন্ন কাজে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়। সিম রেজিস্ট্রেশন কিংবা মোবাইল ব্যাংকিং অথবা অন্য ব্যাংক একাউন্ট খুলতে এনআইডি আবশ্যক। পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করার পর, এনআইডি কার্ড হাতে পেতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়। অনেকেই তো ৫-৬ বছরেও এনআইডি কার্ড হাতে পান না। এক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজনের সময় এনআইডি কার্ড পাবো কোথায়?

এ সকল সমস্যা সমাধানের একটি উপায় রয়েছে। অনলাইন থেকে এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করা। সবকিছু অনলাইন নির্ভর হয়ে যাওয়ায়, আমরা এখন আমাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য অনলাইন থেকেই সংগ্রহ করতে পারি। তো চলুন, স্লিপ নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম দেখে নেয়া যাক।

আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

আমরা নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে সহজেই আইডি কার্ড বের করতে পারি এবং আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করতে পারি।

  • ফরম নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার নিয়ম
  • ভোটার নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার নিয়ম
  • নতুন ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার নিয়ম
  • পুরাতন জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার নিয়ম
  • হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার নিয়ম

উপরোক্ত সকল পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন নিচে।
বাংলায় আইটি

ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করতে হলে আপনার কাছে ফর্ম নাম্বার থাকতে হবে। কোথায় পাবেন এই ফরম নাম্বার? জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করার পর, ছবি তোলা সম্পন্ন হলে আপনাকে ফর্মের যে ছোট্ট একটি অংশ দিয়েছিলো, সেটিতে ফরম নাম্বার পেয়ে যাবেন। এই ফরম নাম্বার ব্যবহার করেই আমরা আইডি কার্ড বের করতে পারবো। তো চলুন, ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড সংগ্রহ করার পদ্ধতি ধাপে ধাপে আলোচনা করা যাক।

ভোটার স্লিপ দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করার সময় আমাদেরকে যে স্লিপটি দেয়া হয়েছিলো, সেই স্লিপ নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারবো। এজন্য নিচে দেখানো সকল ধাপ মনোযোগ সহকারে অনুসরণ করুন।

  • ধাপ ১: প্রথমেই ভিজিট করুন https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইট। এরপর নিচে দেয়া ইমেজ এর মতো একটি পেজ দেখতে পাবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র অনুসন্ধান

  • ধাপ ২: এখন রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করবেন। এরপর নিচে দেয়া ইমেজ এর মতো আরেকটি পেজে নিয়ে যাবে।

হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার নিয়ম

  • ধাপ ৩: উপরোক্ত ইমেজে দেখানো পেজে আপনার ভোটার স্লিপ নাম্বার, জন্ম তারিখ এবং ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট এ ক্লিক করবেন। এরপর আপনার কাছে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার বিভাগ, জেলা এবং অন্যান্য তথ্য চাইবে।
  • ধাপ ৪: এ ধাপে নিচে দেয়া ইমেজ এর মতো একটি পেজ আসবে। সেখানে আপনার কাছে সচল একটি মোবাইল নাম্বার চাইবে। পূর্বে দেয়া নাম্বার ব্যবহার করতে পারেন। এরপর ওটিপি সেন্ড করে দিবেন। এরপর ওটিপি আসলে সেটি সাবমিট দিবেন।

এনআইডি বের করার নিয়ম

  • ধাপ ৫: ওটিপি সাবমিট দেয়ার পর আপনার স্ক্রিনে একটি QR CODE দেখতে পাবেন। সেটি স্ক্যান করতে হবে NID WALLET অ্যাপ দিয়ে। অ্যাপটি প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল করে নিন অন্য একটি ফোনে।

ভোটার আই ডি কার্ড বের করার নিয়ম

  • ধাপ ৬: ইন্সটল হয়ে গেলে NID WALLET অ্যাপটি ওপেন করে নিন। এরপর ক্যামেরা পারমিশন দিবেন। অতঃপর, যে QR CODE টি পেয়েছেন। সেটি স্ক্যান করুন।
  • ধাপ ৭: অতঃপর, আপনার ফেস স্ক্যান করতে হবে। ফেস স্ক্যান না করলে আপনার প্রোফাইলে ঢুকতে পারবেন না। আইডি কার্ড আপনার কি না এটা যাচাই করার উদ্দেশ্যেই ফেস ভেরিফিকেশন করতে হয়।

আইডি বের করার নিয়ম

  • ধাপ ৮: ফেস ভেরিফিকেশন করা হয়ে গেলে আপনার প্রোফাইলে ঢুকে যাবেন। এরপর আপনার প্রোফাইল থেকে সহজেই এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্রটি প্রিন্ট করে নিতে পারেন পরবর্তীতে ব্যবহার করার জন্য।

উপরোক্ত ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়ে যাবেন। এছাড়াও, আরও কোনো তথ্য জানার থাকলে, মন্তব্য করবেন। এখন অন্যান্য উপায়গুলো দেখে নেয়া যাক।

ভোটার নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার নিয়ম

ভোটার নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার তেমন কোনো উপায় নেই। তবে, একটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। আপনার যদি ফরম নাম্বার বা স্লিপ নাম্বার হারিয়ে ফেলেন, তবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। ভোটার নাম্বার মনে থাকলে, আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা সিটি কর্পোরেশন যেতে হবে। এরপর সেখানে যোগাযোগ করে আপনার ভোটার নাম্বার দিয়ে স্লিপ নম্বর জেনে নিতে হবে। অথবা, আপনি চাইলে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আপনার ভোটার নাম্বার দিয়ে ফরম নাম্বার জেনে নিতে পারেন। নির্বাচন কমিশন থেকে একবারে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করে নিয়ে আসতে পারবেন।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

যারা নতুন ভোটার, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করেছেন, কিন্তু এখনো হাতে পাননি। তারা উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে সহজেই অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয় বের করে নিতে পারবেন। এজন্য প্রথমেই services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। এরপর রেজিস্টার এ ক্লিক করে স্লিপ নাম্বার, জন্ম তারিখ এবং ক্যাপচা পূরণ করে রেজিস্টার করে নিবেন। এরপর, NID WALLET অ্যাপ ইন্সটল করে সেখানে আপনার ফেস ভেরিফাই করে নিবেন। অতঃপর, আপনার আইডিতে লগিন হয়ে যাবে। সেখানে থেকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।

পুরাতন আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

পুরাতন আইডি কার্ড বের করার একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। পুরাতন আইডি কার্ড হলে আপনার কাছে আইডি কার্ড থাকা কথা। কিন্তু, যদি আইডি কার্ড হারিয়ে যায়, তবে এক্ষেত্রে আপনি উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে অনলাইন থেকে আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। অথবা, থানায় গিয়ে জিডি করে উক্ত জিডির কপি সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গিয়ে আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

হারানো আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র যদি হারিয়ে যায়, তবে এটি সংগ্রহ করার জন্য উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। এতে করে একটি অনলাইন কপি পেয়ে যাবেন। আপনার জন্ম সাল যদি ২০০১ এর পূর্বে হয়, তবে আপনার হারিয়ে যাওয়া আইডি কার্ড বের করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি পরিশোধ করতে হবে। ২০০১ এর পর যদি জন্ম সাল হয়, তবে তো অনলাইন থেকেই আইডি কার্ড বের করতে পারবেন। এরপর সে কার্ডটি প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারেন।

আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে থানায় জিডি করতে হবে। এরপর সেই জিডির কপি সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন কমিশন যেতে হবে। সেখানে জিডির কপি এবং অন্যান্য তথ্য জমা দিয়ে হারিয়ে যাওয়া আইডি কার্ড নতুন করে সংগ্রহ করতে পারবেন।

সাধারণত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার নিয়ম নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন। আপনি যদি এই পোস্টে উল্লিখিত উপরোক্ত নিয়ম মেনে আইডি কার্ড সংগ্রহের চেষ্টা করেন এবং কোনো সমস্যা ফেস করেন, তবে নিচে দেয়া প্রশ্ন এবং উত্তরগুলো আপনার জন্য সহায়ক হবে বলে আশা করছি।

অনলাইনে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

ইতোমধ্যে আমি এই পোস্টে অনলাইনে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে সহজেই অনলাইনে আইডি কার্ড বের করতে পারবেন এবং আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। যদি আইডি কার্ড না পেয়ে থাকেন, তবে অনলাইন থেকে আইডি কার্ড সংগ্রহ করে আপনার প্রয়োজনের কাজগুলো করে নিতে পারবেন।

স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

পোস্টে উল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনি জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। আপাতত বাংলাদেশ সরকার থেকে প্রত্যেকটি নাগরিককে স্মার্ট আইডি কার্ড দেয়া হচ্ছে। আপনি যদি স্মার্ট আইডি কার্ড নিতে চান, তবে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে বা অন্য উপায়ে স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার কোনো নিয়ম নেই। সরকার থেকে না দেয়া অব্দি আপনাকে আইডি কার্ডের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

টোকেন/স্লিপ/ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড কিভাবে বের করতে হয়, সেটি আমি ইতোমধ্যে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড বের করতে হলে কিভাবে ভোটার স্লিপ দিয়ে আইডি কার্ড বের করতে হয়, সে অংশটি দেখে নিন।

ভোটার আইডি কার্ড বের হতে কতদিন সময় লাগে?

ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করার কিছুদিন পর আমাদের ছবি তুলতে হয়। ছবি তোলা শেষে ৩০ থেকে ৬০ দিন পর আমরা অনলাইন থেকে আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারি। আইডি কার্ড সরাসরি হাতে পেতে আরও বেশি সময় প্রয়োজন। ততদিন অব্দি, অনলাইন থেকে সংগ্রহ করা কপিটি প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারেন।

NID কার্ড অনলাইন হয়েছে কিনা কিভাবে বুঝবো?

এনআইডি কার্ড অনলাইন হয়েছে কিনা সেটা জানার জন্য আপনি ম্যানুয়ালি উপরে দেয়া ওয়েবসাইট থেকে চেক করতে পারেন। অথবা, এসএমএস এর অপেক্ষা করতে হবে। আইডি কার্ড অনলাইনে এসে গেলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। আপনি জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করার সময় যে মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলেন, সেটিতে ম্যাসেজ করে জানিয়ে দিবে। অথবা, ৩০-৬০ দিন পর আপনি অনলাইন থেকে ম্যানুয়ালি চেক করে সংগ্রহ করতে পারবেন।

উপসংহার

বাংলায় আইটির আজকের এই পোস্টে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবো, সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছি। আশা করছি, এই পোস্টে দেয়া তথ্য আপনার জন্য সহায়ক হবে। পোস্ট সম্পর্কিত যেকোনো সমস্যা কিংবা প্রশ্নের জন্য মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে। আজকের মতো এখানেই সমাপ্ত। আল্লাহ হাফেয।

Leave a Comment